গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটি থেকে মুক্তি লাভের উপায় (The way to get rid of gastric or acid)
গ্যাস্ট্রিক
বা এসিডিটি কম বেশি সবারই একটি কমন সমস্যা ।বতর্মানে গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটির সমস্যা
নেই এমন মানুষ খুজে পাওয়া যাবেনা । মেডিকেল সাইন্সের ভাষায় গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটির
নাম হলো “পেপটিক আলসার ডিজিজ” ।গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটির লক্ষনগুলো হলো বদ-হজম, পেটে
জ্বালা-পোড়া, ক্ষুদা মন্দা, বুক জ্বালা পোড়া করা, বমি বমি ভাব, বার বার বমি করা, টক
ঢেকুর উঠা ছাড়াও কারো কারো ক্ষেত্রে পেটে ব্যথা হতে পারে ।যাদের গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটির
সমস্যা আছে তারা নিশ্চয়ই জানেন এটা কতটা যন্ত্রনাদায়ক হতে পারে । তবে কিছু নিয়ম কানুন
মেনে চললে গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটি থেকে খুব সহজেই মুক্তি পাওয়া সম্ভব ।চলুন দেখে নেই
সেই নিয়ম কানুনগুলো কি কি?
গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটি সমস্যায়
করনীয়ঃ-
- সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই খালি পেটে দুই গ্লাস পানি পান করুন ।
- তৈলাক্ত ও অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার পরিহার করুন ।
- প্রতিদিন দুপুর এবং রাতের খাবার একটি নির্দিষ্ট সময়ে খেতে হবে ।
- ভাত খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে এবং খাওয়ার ৩০ মিনিট পরে পানি পান করবেন।খাবার মাঝে কখোনোই পানি খাবেন না ।যারা খাবার মাঝে পানি খান তারা আস্তে আস্তে খাবার মাঝে পানি না খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন।
- খাবার আস্তে আস্তে ভাল করে চিবিয়ে খেতে হবে ।খাবার সময় তারাহুরা করবেন না ।
- পচাঁ বাসী খাবার খাবেন না ।
- রাতের খাবার ঘুমানোর অন্তত দুই ঘন্টা আগে খেতে হবে।
- কখোনোই অতিরিক্ত পরিমান খেতে যাবেন না আবার পেট কখোনোই একেবারে খালিও রাখবেন না ।
- খাবার পর সাথে সাথে শুয়ে পরবেন না, ৫ থেকে ১০ মিনিট আস্তে আস্তে হাটাচলা করুন তারপর শুতে যান।
- ধূমপান এবং তামাক জাতীয় দ্রব্য পরিহার করুন ।
- যাদের চুইংগাম চিবানোর অভ্যাস আছে তারা চুইংগাম চিবানোর অভ্যাস ত্যাগ করুন।
- চা-কফি, জুস খাওয়া কমিয়ে দিন।
- কোমল পানীয়, ফাস্ট ফুড এবং চিনি এড়িয়ে চলুন ।
- প্রতিদিন মেনুতে আশঁযুক্ত খাবার রাখুন ।
- অতিরিক্ত ওজন থাকলে তা কমিয়ে ফেলুন।
- মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকুন এবং পরিমিত পরিমান ঘুমান ।
গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটি সমস্যা
দূর করার কিছু প্রাকৃতিক বা ঘরোয়া উপায়ঃ-
১) পানি-
প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করুন।গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটির সমস্যায় পানি
পানের বিকল্প নেই।পানি আপনার শরীরের বিষাক্ত পর্দাথ বের করে খাবার দ্রুত হজমে সাহায্য
করে।তবে ভাত খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে এবং খাওয়ার ৩০ মিনিট পরে পানি পান করবেন খাবার মাঝে
কখোনোই পানি পান করবেন না ।
২) আদা-
প্রতি বেলা খাবার পর এক টুকরো আদা চিবিয়ে খেতে পারেন । আদা গ্যাস্ট্রিক সমস্যায় জ্বালাপোড়া,
বমির সমস্যা এবং বদ হজম দূর করতে খুবই কার্যকর।
আরও পড়ুন সুস্থ থাকার ১০ চাবিকাঠি বিস্তারিত এখনে ক্লিক করুন .....
৩) তুলসীপাতা-
গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটির সমস্যায় আপনি তুলসীপাতা খেতে পারেন। যখনই গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটির
সমস্যা মনে হবে তখনই ৫-৭ টি তুলসীপাতা ভাল করে ধুয়ে চিবিয়ে খেয়ে নিন ।
৪) গুড়-
গুড় গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটির সমস্যায় কিচুটা মুক্তি দিতে পারে। ঘরে অল্প কিছু গুড় রাখতে
পারেন, যখন বুক জ্বালাপোড়া করবে তখন টুকরো গুর মখে নিয়ে চুসতে পারেন।
গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটি সমস্যায়
যে ঔষধগুলো খেতে পারেন-
- · Cap. Sergel (20/40mg)
১ টি করে সকালে ও রাতে খাবার ৩০ মিনিট পূর্বে খেতে
হবে।
- · Omidon (10mg)
১ টি করে ৩ বার খাবার ৩০ মিনিট পূর্বে খেতে হবে।
এই ওষুধ দুটি ১ মাস খেতে হবে। আপনি ৫ থেকে ৭ দিন
খেয়ে দেখতে পারেন।যদি ভাল মনে করেন তবে ১ মাস খাবেন ।
এছাড়া যাদের গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটির সমস্যাটা
একটু বেশি তারা উপরের ওষুধ দুটি খাবার সাথে সাথে আর একটি সিরাপ যোগ করে নিবেন –
- · Syr. Flatameal DS
৩ চামচ করে ৩ বার খাবার ৩০ মিনিট পরে খেতে হবে।
ওষুধ নির্দেশনায়
ডাঃ ওয়ালিউল্লাহ মিরাজ
৩৩ তম বিসিএস
একটি
কথা মনে রাখবেন রোগ প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ করাটাই উত্তম।আশা করি উপরের গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটি সমস্যায় করনীয়ঃ- গুলো
মেনে চললে গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটির সমস্যা আপনার নিয়ন্ত্রনে থাকতে বাধ্য । তারপরও আপনার
সমস্যা থাকলে ঔষধ খাবার প্রয়োজন হতে পারে সেক্ষেত্রে গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটি সমস্যায় যে ঔষধগুলো খেতে পারেন- শিরোনামে যে ওষুধগুলো দেয়া আছে সেগুলো ১মাস খেতে
পারেন।
No comments